পরকীয়ায় জড়িয়ে হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে দুই সন্তানের জনক শাহবাগী ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার!
শুরুতেই যারা জানেন না, তাদের উদ্দেশ্যে কিছু পুরনো প্রসঙ্গ তুলে ধরা দরকার।
ব্যারিস্টার গোলাম মারুফ ওরফে নিঝুম মজুমদার, অনলাইনে তাকে অনেকেই চেনেন লন্ডন প্রবাসী ব্লগার হিসেবে। পাশাপাশি আইসিএসএফ- ইন্টারন্যশনাল ক্রাইমস স্ট্রাটেজি ফোরামের (বহি’ষ্কৃত) কর্মী হিসেবে। সেই সাথে নানা বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির সুবাদে। কিন্তু তার আরও পরিচয় রয়েছে। শেখ মুজিব হ’ত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ফ্রিডম পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এবং দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুকের মেয়ের জামাতা নিঝুম মজুমদার।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১২টি সংগঠন, এবং সংগঠনবহির্ভূত একক ব্যক্তিদের নিয়ে একটি জোট আইসিএসএফ।
সন্দেহজনক কর্মকান্ডের কারণে আইসিএসএফ এর কোর গ্রুপের সকল সদস্যের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বসম্মতিক্রমে আইসিএসএফ থেকে নিঝুম কে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়। যদিও আইসিএসএফ এর নাম ভাঙিয়ে চলেছেন তিনি সব সময়। বিডি নিউজসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কলামিস্ট হিসেবে তিনি এই পরিচয় এখনও ব্যবহার করেন।
বিবৃতিতে আইসিএসএফ জানায়, ১৯৭১ এর পক্ষের অন্যান্য সংগঠন এবং ১৯৭১ এর পক্ষের পরীক্ষিত সহযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অত্যন্ত নোংরা মিথ্যাচারসহ সরাসরি মানহানিকর এবং সন্দেহজনক কিছু অপ-তৎপরতার প্রমাণাদি সংস্থাটির হাতে রয়েছে হস্তগত হয়েছে। এসব অপ-তৎপরতা ও সন্দেহজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কর্মকাণ্ডের কারনে নিঝুমের বিরু’দ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণাও দেয় সে সময় সংস্থাটি। সে সময় অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, নিঝুম ফ্রিডম পার্টির পক্ষে গোপনে কাজ করছেন। লন্ডনে বসে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের হয়ে কাজে নেমেছেন।
এসব ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে নিজস্ব কল্পনাপ্রসূত একটি গল্প তৈরী করে পরিস্থিতি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন বলে তার বিরু’দ্ধে অভিযোগ আছে। এ প্রসঙ্গে বনানীতে আপন জুয়েলার্সের মালিকের পুত্র সাফাত কর্তৃক ধ-র্ষ’ণের ঘটনাটির উদাহরণ দেওয়া যায়। নিঝুম মজুমদার সেই ঘটনার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরাধীদের বিরু’দ্ধে আইনি দিক নিয়ে পর্যালোচনার চাইতে পুরো ঘটনাকে একটি রগরগে উত্তে’জনাময় চটি গল্পের ধাঁচে পরিবেশন করেন। যার সাক্ষ্য হিসেবে তিনি ভিক্টিম দুই নারীর সাথে কথোপকথনের দাবি করেন। পত্র পত্রিকায় নিঝুম মজুমদারের ‘গল্পটি’ বেশ সাড়ম্বরে প্রকাশ হওয়ার পরে জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয়, দুই নারী এত রসিয়ে রসিয়ে নিঝুম মজুমদারকে যেহেতু অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, তার মানে ভিক্টিমরাও ঘটনাটি ‘উপভোগ’ করেছেন। আর এভাবে দেশব্যাপী তুমুল চাঞ্চল্যসৃষ্টিকারী একটি অপরাধের ঘটনার পাবলিক পারসেপশন পরিবর্তিত হয়ে যায়। যার ফলে সে সময় নিঝুম মজুমদারকে নিয়ে সাধুবাদ দেয় অপরাধীর সমর্থকরা।
নিঝুম মজুমদার সম্প্রতি আবার আলোচনায় এসেছেন পরকীয়া নিয়ে। যার জের ধরে তিনি হারপিক খেয়ে নিজের জীবন দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিবাহিত এবং দুই সন্তানের পিতা নিঝুম মজুমদারের পরকীয়া নিয়ে কারো কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তিনি এর মাধ্যমে এক নারীকে ক্রমাগত সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে নিপী’ড়ন চালিয়ে যাচ্ছেন, যা গুরুতর অপরাধও বটে।
যেহেতু উক্ত নারী নিজেই নিঝুম প্রসঙ্গটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উন্মোচন করেছেন, তাই এখানে তার নাম পরিচয় ঢেকে রাখা আবশ্যক মনে করছি না।
তিনি সাবেক মিস আয়ারল্যান্ড খ্যাত (২০১৩) বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মাকসুদা আক্তার প্রিয়তী, পেশায় একজন বৈমানিক। পাশাপাশি মডেলিং, লেখালেখি এবং অভিনয় করেন। বসবাস করেন আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বেশ সরব। নিয়মিত কথা বলেন নারীর ওপর সহিং’সতা, বৈ’ষম্য এবং নানা ধরণের নিপী’ড়নের বিষয়ে। বিশেষ করে #me_too আন্দোলন নিয়ে তিনি শুরু থেকেই উচ্চকণ্ঠ। নারীদের প্রতি পুরুষশাসিত সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের পেছনে তিনি অনেক বছর ধরেই আন্তর্জাতিক অনেক সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন।
প্রিয়তীর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ইতিমধ্যে প্রকাশিত নিঝুমের সাথে ফোনালাপ থেকে জানা যায়, তাদের সম্পর্কটা শুরুতে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগিতার মনোভাবপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে তা পী’ড়নের পর্যায়ে চলে যায়। প্রিয়তী বার বার সম্পর্ক থেকে সরে আসার চেষ্টা করেছেন, কারণ এই সম্পর্কের মাঝে কোনো পরিণতি দেখতে পাচ্ছিলেন না। নিঝুমের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি তার স্ত্রী ও সন্তান রেখেই প্রিয়তীর সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে চান। আর এ নিয়ে ক্রমাগত গোঁয়াতুর্মিও চালিয়ে যান নিঝুম। মানসিকভাবে চাপ দিতে থাকেন প্রিয়তীকে। বার বার “সুইসাইড” এর হুম’কি দিয়ে যান। প্রিয়তী অবস্থার গুরুত্ব অনুধাবন করে তাকে চিকিৎসা গ্রহণের অনুরোধ জানান। তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ন’ষ্ট না করারও অনুরোধ করেন। কিন্তু নিঝুম কিছুই কানে তোলেননি। উল্টো হুটহাট দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ডাবলিনে হাজির হতে থাকেন। এতে প্রিয়তীও অ’প্রস্তুত অবস্থায় পড়েন। তবুও সৌজন্যতার খাতিরে তিনি দেখা সাক্ষাৎ করেন। আর এসব সরলতাকে পুঁজি করে নিঝুম আরও আগ্রা’সী হয়ে উঠতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রিয়তীকে নিয়ে নানাবিধ অ’সৌজন্যমূলক পোস্ট দিতে থাকেন।
প্রিয়তী এক পর্যায়ে নিঝুমের ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেন। এর প্রেক্ষিতে নিঝুম ফেসবুকে প্রিয়তীকে অ’শ্রাব্য এবং অ-শালীন ভাষায় লেখালেখি শুরু করেন। পরবর্তীতে প্রিয়তীর দেওয়া পোস্টে জানা যায়, নিঝুমের স্ত্রীও নাকি সংসারে অ’শান্তি তৈরীর পেছনে প্রিয়তীকে দায়ী করেন। স্বামীকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। যদিও নিঝুমের অতি ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে একটি কথা চাউর হয়- স্ত্রীর আইডি ব্যবহার করে নিঝুমই নাকি এসব করছেন। যদিও এ ব্যাপারে স্পষ্ট নয় কিছুই। প্রিয়তীর সেই পোস্ট থেকে পুরো বিষয়টির আরও কিছু ধারণা পাওয়া যাবে-
নিঝুম কিন্তু এখানেই থেমে যাননি। প্রিয়তী ফোন রিসিভ করা থামিয়ে দিলে নিঝুম কৌশলে প্রিয়তীর ৮ বছর বয়সী কন্যার ফোন নাম্বার সংগ্রহ করেন। তার ইনবক্সে প্রিয়তীর সাথে কথোপকথনের স্ক্রিণশট, অডিও রেকর্ডিংসহ নানাবিধ বার্তা পাঠাতে থাকেন। যাকে অত্যন্ত নিচুমনের পরিচায়ক বলা যায়।
প্রিয়তীর বক্তব্য থেকে পাঠকরা আরেকটু পরিষ্কার ধারণা পাবেন। প্রিয়তী বলেছেন,
২৯ অক্টোবর ২০১৮-তে আমি #মি_টু নিয়ে মুখ খুলি, তখন লন্ডনের জনৈক ব্যারিষ্টার সাহেব, আমার পাশে দাঁড়ান। যদিও পরবর্তিতে এ বিষয়ে উনার তেমন কোনো ভূমিকা ছিলো না। তবে উনার সঙ্গে আমার একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে উনার মোহ অন্যদিকে ঘুরতে শুরু করে, যা কখনোই আমার পরিকল্পনায় ছিল না। কখনই উনাকে জীবনসঙ্গী হিসাবে চিন্তাও আমার মাথায়ও আসেনি। কিন্তু উনি আস্তে আস্তে পা’গলামি করা শুরু করেন। তবে আমি বন্ধু হিসাবে উনাকে চেষ্টা করেছি বোঝাতে।
দেয়ালে পিঠ না ঠেকে গেলে আমি কখনো কারো সাথে রু’ঢ় হতে পারি না, কিংবা স্বার্থ’পরের মতো মুখ সরিয়ে নিতে পারি না। কোন পর্যায় পর্যন্ত মানসিক চাপ, যন্ত্র’ণা এবং নির্যা’তন সহ্য করতে হয়েছে আমাকে তা আসলে কোনদিনই বর্ণনা করা সম্ভব নয়, আমি ঐ ব্যাখ্যায় যাবোও না।
বন্ধু হিসেবে তার আলাদা সংসার জেনে তার বৈবাহিক সম্পর্ক পুনর্মিলিত করার স্বার্থে আমি সব করেছি। আমাকে তার প্রস্তাব গ্রহণ করতে এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে, সে সহ তার নিজের ৩৫ বছর ঊর্ধ্ব বোনসহ তারা রীতিমতো আকুতি করেছেন। তাও ভিডিওতে পাবেন। এমনকি বিভিন্ন কাছের বন্ধুদের দিয়ে ফোন/ টেক্সট করাতেও বিন্দু মাত্র কার্পণ্য করেনি। নানান রকমের, নানা উপায়ে আমাকে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা তো ছিলই।
এর মধ্যে ভিডিও কলে রেখে আত্ম-হ’ত্যার মতো ঘটনাও ঘটানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। এর পরেও থামেননি। আমি বরাবরই উনাকে উনার সংসার ফিক্স করতে বলেছি। এরপরেও যখন উনি আমার পিছু ছাড়তে নারাজ তখন আমি না পেরে, উনার পরিবারের মুরুব্বীদের কাছ পর্যন্ত আমার পরিবারের সদস্যদের দিয়ে অভিযোগ করিয়েছি, (যা ভিডিওতে উনারই করা ভয়েস রেকর্ড দুটো দিয়েছি) যাতে আমাকে ঘৃ’ণা করে হলেও যেন তিনি ফেরত যান নিজের সংসারে।
সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছি’ন্ন করার পরও এবছর এপ্রিল ও মে মাসে পরোক্ষভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন তিনি, সেটাও ভিডিওতে দেখতে পাবেন। যেখানে আমার কোন যোগাযোগের চিহ্নও কেউ দেখাতে পারবেন না। অথচ এখনও তারা সবার কাছে আমাকে নোং’রা চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন কারণ এই কাজটি খুব সোজা। মেয়েদের দিকে সহজেই আঙ্গুল তোলা যায়।
আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আমার সাথে পরিচয় হওয়ার সময় থেকেই তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন এবং উনাদের কন্যা সন্তান নভেম্বর ২০১৯-এ জন্ম নিয়েছে, তার বিন্দুমাত্র আঁচ আমাকে পেতে দেয়নি ব্যারিষ্টার ভদ্রলোক! আমি যেন না জানতে পারি তার জন্য ভদ্রলোক কখনো তার সদ্যোজাত সন্তানের ছবি ফেসবুকে পর্যন্ত দেননি ৩ মাস, অথচ তখন উনি ফেসবুকে এক্টিভ ছিলেন এবং অন্যান্য পোস্ট দিতেন। আমি জেনে যাওয়ার পর ২ ফেব্রুয়ারিতে সন্তানের ছবি প্রথম প্রকাশ করেন।
আমি এরপর নিজের ক্ল্যারিফাই আর করতে আসবো না। আমার নীতি-নৈতিকতার অবস্থান যে এই বিষয়ে স্পষ্ট। আমি বিষয়টাতে সৎ ছিলাম। তা উনার স্ত্রী ভদ্রমহিলা না জানলেও উনার স্বামী খুব ভালো করেই জানেন।
আমি এই বিষয়টি নিয়ে এখানে থেমে যাচ্ছি। (তবে আঘা’ত আসলে চুপ করে থাকবো না, অলরেডি আপনার তৈরি করা কিছু ঘটনার জন্য আমার আর আমার সন্তানদের যথেষ্ট মানসিক ট্রমার মধ্যে যেতে হয়েছে।) আপনাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য শুভকামনা রইলো। আর যারা নানা রকম রটনা করছেন তাদেরকে বলবো প্লিজ শোনা কথা নয়, যাচাই করুন, নিজের বিবেক-বুদ্ধিও কিছুটা কাজে লাগাবেন এই আশা করছি।
প্রিয়তীর বক্তব্যে সুস্পষ্টভাবে পুরো বিষয়টি উঠে এসেছে। এছাড়া তথ্য প্রমাণ হিসেবে ভিডিও তো রয়েছেই। এই মানসিক বি’কারগ্রস্ত ব্যারিস্টার ভদ্রলোক, যিনি সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট, ব্লগারসহ নানা পরিচয় ব্যবহার করেন সব সময়, তিনি তার স্ত্রীর সাথে জালিয়াতি করেছেন, সন্তানদেরকে আদর স্নেহ থেকে ব’ঞ্চিত করেছেন, হারপিক পান করে পরিণত বয়সে হাস্যকর কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এসবের মাধ্যমে এক নারীর জীবনটাও দু’র্বিষহ করে ফেলেছেন ইতিমধ্যে। তাকে মানসিক নিপী’ড়ন করেছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে হে’য় করারও প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।
যার ফলে, এখন সচেতন মহলের মনে এই নিঝুম মজুমদারকে নিয়ে প্রশ্ন - নিঝুম মজুমদার আসলেই মানসিক ভাবে সুস্থ কিনা!
ভিডিও:
Comments
Post a Comment