‘ব্র্যাক’ এদেশে কি প্রতিষ্ঠা করতে চায়?



সম্প্রতি ব্র্যাক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক সমালোচনার শিকার হওয়ার পর এই এনজিও আলোচনায় আসে। ফজলে হাসান আবেদ, কেসিএমজি (২৭ এপ্রিল ১৯৩৬ - ২০ ডিসেম্বর ২০১৯) ছিলেন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা। ব্র্যাক শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও। ব্র্যাকের কর্মকর্তা-চাকুরের সংখ্যা লক্ষ লক্ষ। এরা প্রশিক্ষিত ও সুসংগঠিত। ফজলে হাসান আবেদকে ব্রিটিশ রাজ পরিবার থেকে থেকে দেয়া হয়েছিল নাইটহুড উপাধি। নাইটহুড উপাধির কারণে ফজলে হাসান আবেদকে ডাকা হয়- ‘স্যার ফজলে হাসান আবেদ’ বলে। ইতিহাস বলে, ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদের সূচনা হয়েছিলো জলদস্যুতার মাধ্যমে। ব্রিটিশ সম্রাজ্যে যে যত বড় জলদস্যু, সে তত বড় ‘স্যার’।

Sir James Lancaster,
Sir Henry Mainwaring,
Sir Amyas Preston,
Sir Walter Raleigh,
Sir George Somers,
Sir Francis Verney
(https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_pirates)

এগুলো হলো- ইতিহাস কুখ্যাত সব ব্রিটিশ জলদস্যুর নাম। এদের কাজ ছিলো জাহাজে আক্রমণ করে লুটপাট করা এবং সেই সম্পদ ব্রিটিশ রানীর হাতে তুলে দেয়া।

সময় পাল্টেছে, লুটপাটের ধরনও পাল্টেছে। আগে জলদস্যু বাহিনী খুলে ডাকাতি করা হতো, এখন এনজিও বানিয়ে লুটপাট করা হচ্ছে। আমি দেখেছি, অনেক বুদ্ধিজীবি বাংলাদেশে সক্রিয় এনজিওগুলোকে তুলনা করেছে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যেমন নীল চাষের মাধ্যমে বাংলার জনগণের রক্ত চুষে খেতো, এখনও বাংলাদেশের এনজিওগুলো বাংলাদেশের জনগণকে চুষে খাচ্ছে। তবে তাদের গন্তব্য ঠিক আছে। উভয় সম্পদ চুষে পাঠাচ্ছে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদের কাছে।

ফজলে হাসান আবেদ এর নামের পরে লেখা হয় KCMG । লেখার সিস্টেম: Sir Fazle Hasan Abed KCMG। KCMG কোন পুরুষ্কার নয়, একটি চাকুরী। বিদেশী রাষ্ট্রতে ব্রিটেনের স্বার্থ রক্ষার্থে যে সব ব্যক্তিকে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেয়া হয় তাদের KCMG বলে। (http://www.brac.net/governing-body)

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘ব্র্যাক এনজিও’র ব্যাপক ও সন্দেহজনক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু কেন এই উৎসাহ ? 

মায়ানামারের রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু হওয়ার পর রুশ গোয়েন্দারা এক রিপোর্টে দাবি করেছিলো, “রাখাইনে অস্থিতিশীলতার মূলে রয়েছে আমেরিকান ধনকুবের ইহুদী তেল ব্যবসায়ী জর্জ সরোসের তেল ও গ্যাস ব্যবসা।” (http://bit.ly/2jaK3Kl) জর্জ সরোস বঙ্গোপোসাগরের এ অংশে তেল ও গ্যাস সম্পদের ব্যাপারে প্রচুর উৎসাহি এবং সেই স্বার্থেই সে ঘটনাগুলোর পেছনে কাজ করছে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই আমেরিকান ধনকুবের ইহুদী তেল ব্যাবসায়ী জর্জ সরোসের খুব ঘনিষ্ট জনের নাম হচ্ছে ফজলে হাসান আবেদ। ২০০৬ সালে ইহুদী তেল ব্যবসায়ী জর্জ সরোস বাংলাদেশের শাহবাগে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলো। সেই অনুষ্ঠানের স্টেজে জর্জ সরোসের একপাশে বলেছিলো ফজলে হাসান আবেদ আর একপাশে বসেছিলো ড. ইউনুস (http://bit.ly/2oLaRDL)। ২০১৩ সালে জর্জ সরোসের ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন থেকে ফজলে হাসান আবেদকে পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়।(http://bit.ly/2BMrWCk)

গত কয়েক বছর আগে পাকিস্তান তার দেশে ব্র্যাক এনজিওকে নিষিদ্ধ করেছে (http://bit.ly/2CDyd08)। এর কিছুদিন পর ফের ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করে জর্জ সরোসের সমস্ত এনজিওকে। (http://reut.rs/2D23DhJ)

এনজিওগুলোকে অনেকে তুলনা করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কিন্তু শুরুতে এ অঞ্চলে ব্যবসা করার নাম দিয়ে এসেছিলো, তারা ভারতবর্ষের ক্ষমতা দখলের কথা মুখেও আনেনি। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা সক্রিয় হয়ে উঠে এবং অনুমতি পাওয়ার ১৫৭ বছর পর তারা এ অঞ্চলের ক্ষমতা হাতে নিয়ে নেয়।

আসুন দেখে নিই ব্র্যাকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আড়ং এ ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনা:

২০২১ সালের মার্চে ভাইরাল হওয়া একটা ভিডিওতে আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন, ইমরান হুসাইন ইমন নামক এক মুসলিম যুবকের মুখে দাড়ি থাকার কারণে আড়ং এর চাকরীর ইন্টারভিউর সময় তাকে রিজেক্ট করে দেওয়া হয়েছিল। যোগ্যতা থাকা সত্বেও মুখে প্রিয়নবী (সাঃ) এর সুন্নাত থাকার কারণে তাকে চাকরী দেওয়া হয়নি। 

এছাড়াও ২০২০ সালের আগস্ট মাসে আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো, সেটি হলো একজন মুসলিম নারীকে হিজাব পরিধান করে থাকার কারণে আড়ং এর একটি শোরুমে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

এরপর ২০২৪ সালে আরেকটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে চাকরিতে যোগদানের পর এক নারীকে হিজাব পড়তে নিষেধ করেছে আড়ং কর্তৃপক্ষ। যেটা তার অন্য বান্ধবী ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছিল।



ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি?

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দর্শন বিভাগের শিক্ষক আসিফ মাহতাব সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই ছিঁড়ে ফেলার ঘটনাকে ‘ধ্বংসাত্মক’ ও ‘অশিক্ষকসুলভ আচরণ’ আখ্যা দিয়ে তাকে বরখাস্ত করেছিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। অথচ তিনি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটা পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন, যেখানে 
ট্রান্সজেন্ডার নামক পশ্চিমা অপসংস্কৃতিকে গল্পের আবরণে প্রমোট করা হয়েছিল। গত কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। 

আর ২০২৪ সালের ১০ মার্চ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গালা নাইটের নামে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির কতিপয় শিক্ষার্থীর যে অশ্লীল ও বেহায়াপনার চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সেটা ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। তারা অসভ্যতার সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীদের একটি সেমিস্টারে তাদের সবাইকে একটি আবাসিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হয়। তিন মাসের এই সেমিস্টার ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে তথাকথিত নৈতিকতা, মূল্যবোধের বীজ বপন করার প্রতিশ্রুতি করে। আসলেই কি তাই? নাকি চিত্র ভিন্ন?

এই বিষয় সম্পর্কে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের একজন শিক্ষার্থীর এই ব্লগ টা পড়ে দেখতে পারেন। 

এছাড়াও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এলজিবিটি প্রমোটের বিস্তর অভিযোগ আছে। যেগুলো আগামীতে এই ব্লগে সংযুক্ত করা হবে ইনশা'আল্লাহ।

Comments

Popular posts from this blog

সৌদি জোটের সামরিক আগ্রাসনের পর ইয়েমেনের কোন অংশ কারা নিয়ন্ত্রণ করছে?

Midnight Massacre in Dhaka by Security Forces of Bangladesh [WARNING GRAPHIC VIOLENCE]